ত্বরণ কাকে বলে?
সময়ের সাথে কোনো বস্তুর অসম বেগের পরিবর্তনের হারকে ত্বরণ বলে। অর্থাৎ যদি কোনো বস্তু সুষম বেগে না চলে তবে তার বেগের মানের বা দিকের যেকোনো একটির বা মানের এবং দিকের উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের ফলেই ত্বরণের সৃষ্টি হয়। আর একক সময়ের পরিমাণকে আমরা ত্বরণ বলি।
ত্বরণের সূত্র
আমরা একটু আগেই জানলাম যে, একক সময়ে বস্তুর বেগের পরিবর্তনই ত্বরণ। অর্থাৎ, ত্বরণের সূত্রও খুব সিম্পল।
যদি কোনো বস্তুর আদিবেগ হয় u এবং শেষবেগ হয় v, তবে তার বেগের পরিবর্তন কত? উত্তরটা হবে (শেষবেগ - আদিবেগ) বা (v-u)। বেগের পরিবর্তন তো আমরা পেয়ে গেলাম। এবার আমাদের প্রয়োজন বেগের পরিবর্তনের হার নির্ণয় করা তথা একক সময়ে বেগের পরিবর্তন কত তা নির্ণয় করা।
তাহলে, যদি আমরা সোজা ঐকিক নিয়মে চলে যাই তবে আমরা বলতে পারি,
যদি বেগের (v-u) পরিমাণ পরিবর্তন হয় t একক সময়ে। তবে,
t একক সময়ে বেগের পরিবর্তন (v-u) একক
সুতরাং, 1 একক সময়ে বেগের পরিবর্তন (v-u)/t একক।
এই ১ সেকেন্ডে বেগের পরিবর্তনই বেগ পরিবর্তনের হার বা ত্বরণ।
অর্থাৎ, ত্বরণ = বেগের পরিবর্তন / প্রয়োজনীয় সময়।
ত্বরণ ও মন্দন
ত্বরণ ও মন্দনের হিসাব প্রায় একই। আমরা বলেছিলাম যে, একক সময়ে বেগের পরিবর্তনই ত্বরণ। এখন এই পরিবর্তন ২ ভাবে হতে পারে।
ক) বেগ বাড়তে পারে
খ) বেগ কমতে পারে
বেগ যখন বাড়ে, তখন (শেষবেগ - আদিবেগ) এর মান স্বাভাবিকভাবেই ধনাত্মক হয়। আর এই ধনাত্মক ত্বরণকে আমরা ত্বরণ বলে থাকি সোজাসুজি।
অন্যদিকে বেগ যখন কমে, তখন (শেষবেগ - আদিবেগ) এর মান ঋণাত্মক হয়। এই ঋণাত্মক ত্বরণকেই মন্দন বলা হয়। তাহলে আশা করি ত্বরণের পাশাপাশি মন্দন কাকে বলে এবং মন্দন নির্ণয়ের সূত্র কী বা প্রক্রিয়া কী তাও আমরা জেনে গেলাম।
এবার তবে ২টি উদাহারণ দিয়ে বুঝানো যাক।
উদাহারণ ১:
একটি মোটরসাইকেল তার চলার ৫৭ তম সেকেন্ডে ২০ মিটার/সেকেন্ড বেগে সামনের দিকে অগ্রসর। ১ মিনিট ২৩ তম সেকেন্ডে তার গতিবেগ ২৪ মিটার/সেকেন্ড। মোটরসাইকেলটির ত্বরণ কত?
উত্তর:
বেগের পরিবর্তন = (২৪-২০) বা ৪ মিটার/সেকেন্ড
প্রয়োজনীয় সময় = (১ মিনিট ২৩ সেকেন্ড বা ৬০+২৩ বা ৮৩ সেকেন্ড) - ৫৭ সেকেন্ড = ২৬ সেকেন্ড
সুতরাং, ত্বরণ = ৪/২৬ মিটার/সেকেন্ড^2
উদাহারণ ২:
একজন বাস চালক ১১ মিটার/সেকেন্ড বেগে বাস চালাচ্ছেন। হঠাৎ তিনি ব্রেক করলে তা ৮ সেকেন্ড সময়ে স্থির অবস্থানে পৌঁছায়। ত্বরণ/মন্দন কত?
উত্তর নিজেরাই করতে পারবে। তবে ২য় ক্ষেত্রে যেহেতু স্থির অবস্থানে পৌছেছে, অর্থাৎ বেগ কমে শূন্য হয়ে গেছে- তাই এক্ষেত্রে মন্দন হয়েছে। এই দুটি উদাহারণে কোনো ভুল করেছি? ভুল করে থাকলে খুঁজে বের করে আমাদের জানাও ফেসবুক পেজে।
Tags:
Physics